"পরিবর্তন নয় পুনর্গঠন জরুরি" আবদুল নবী

পরিবর্তন নয় পুনর্গঠন জরুরি

আবদুল নবী

সমাজ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ দেশ পরিবর্তন করার জন্য অনেক চিন্তাবিদ যুবক কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সংগঠন কিংবা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কাজের জন্য সাদুবাদ জানাচ্ছি।
কিন্তু অতি দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে দেশ কখনও পরিবর্তন করা সম্ভব না। দেশের অবকাঠামো ৪ ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। এই ভাগ যেমন তেমন ভাগ নয়। শাসন শোষণের ভাগ।  যেমনঃ একটা সমাজের কথা ভেবে দেখেন। একটা সমাজে একদল মানুষ গাধারখাটুনি খেটে আয় উপার্জন করে। সেই উপার্জন থেকে অপর একদল মানুষ কমিশন খায় বিভিন্ন উপায়ে। যেমনঃ এলাকায় কোন ছোট-বড় প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করতে গেলে নেতাদের ইচ্ছে -অনিচ্ছার সাথে তাদের পকেট গরম করতে হয়। এটাকে বলে নাকি হাত খরচ। হাত খরচ যে ১ লক্ষ কিংবা ৫০ হাজর টাকা হয় তা জানতাম না। তারা বলে, এসব তারা একা খাবে না। উপরওয়ালাকেও ভাগ দিতে হবে।  আর উপরওয়ালার তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেলো পার্টি অফিস(রাজনৈতিক দলের অফিস) এ দুই-তৃতীয়াংশ দিতে হবে। তারপর জেলার অফিস থেকে জাতীয় অফিসে।

সর্বমোট আমরা ৪টা শ্রেণি পেলাম। একদল খাঁটি মানুষকে একদল শিয়াল শোষণ করে। ঐ শিয়ালকে কুকুরে শোষণ করে। আর ঐ কুকুরের দলকে ইঁদুরের দল শোষণ করে। শেষমেশ খাঁটি মানুষগুলোই মারা যায়। এই দেশকে আর কখনও পরিবর্তন করা সম্ভব না। এই দেশ যেহেতু সেই ইংরেজ কিংবা পাকিস্তান আমলের মতো ভাগ হয়ে গেছে সেহেতু এটাকে পরিবর্তন না করে পুনর্গঠন করাই যুক্তিযুক্ত। 

এখন হয়তো প্রশ্ন আসবে , "এই পুনর্গঠন কিভাবে সম্ভব.?" আমি কোন রাষ্ট্রীয় চিন্তাবিদ নয় যে আমার আলোচনা মূখ্য হবে। এই সমাজ কিংবা দেশকে বিভিন্নভাবে পুনর্গঠন করা যায়। যেমনঃ রাজনৈতিক পলিসি পরিবর্তন, সংবিধানের ৭৭নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠা, সরকারি সকল বিভাগ ( আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ) থেকে প্রকৃতপক্ষেই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ তুলে নিতে হবে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিতে হবে। এসব তো সমস্যা থেকে বললাম। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যতদিন পর্যন্ত বয়স্কদের হাতে ক্ষমতা থাকবে ততদিন এই সমাজ শোষণ চলতে থাকবে। আমি বলছি না বয়স্কদের বাদ দিতে। শিশু এবং বয়স্ক উভয়ই এক এই কথা বয়স্করা বলেন। তাহলে শিশুদের যদি ক্ষমতায় আনা না যায় তাহলে বয়স্কদের দিয়েও শাসন চালানো মানে অবকাঠামোর ভাগাভাগি করা। অবশ্যই সব বয়স্ক ব্যক্তি এক নয়।

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যুবকদের হাতে হস্তান্তর করতে হবে। যুব সমাজ চাইলে একটা দেশকে ১০০ বছর সামনেও নিতে পারেন আবার ১০০ বছর পিছনেও নিতে পারেন যা বয়স্কদের দ্বারা সম্ভব নয় বলে আমি মনে করি।
বঙ্গবন্ধু ভাগ হয়ে যাওয়া সমাজকে পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ করতে পারলে মুজিবের আদর্শ নিয়ে আমরা কেন মুজিবের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠন করতে পারবো না.?
আবারও পুনরাবৃত্তি করছি। সমাজ পরিবর্তনের চিন্তাধারার পরিবর্তন করে পুনর্গঠন করার চিন্তা করে সেটাকে একটা লক্ষ্য হিসেবে নিয়ে বাস্তবায়ন করাই বর্তমান সময়ের জন্য উচিত হবে বলে মনে করি।

লেখকঃ আবদুল নবী

কক্সবাজার সিটি কলেজ ,কক্সবাজার।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post