পঞ্চম পর্বের পর...
এভাবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ব্যর্থ চেষ্টার পর আবারও আব্বুর সামনে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘‘আব্বু, আম্মুর কি হয়েছ? আর কথা এড়িয়ে যাচ্ছে কেনো সবাই?” এবারও কোন উত্তর পেলাম না। কি অসুখ হয়েছে তা জানার চেয়ে আম্মুর বর্তমান অবস্থা কেমন তা জানার জন্য আমার ভিতরটা ফেটে যাচ্ছে।
চোখের এক কোণে পানি জমেছে। পানি মুছতে মুছতে দেখি আব্বু আমার দিকে আসছে। তাড়াহুড়ো করে চোখ মুছে দাঁড়াতেই আব্বু সামনে চলে আসে। এবার ঠান্ডা মাথায় বললো, ‘‘দুশ্চিন্তা মুক্ত হলাম। আল্লাহ সবকিছু ঠিকঠাক করে দিয়েছে”। কথাটা শুনে একটু হলেও ভালো লাগলো। আর খুশিতে বললাম, ‘‘আম্মুর কি হয়েছিল আব্বু? আমাকে কেন একবার জানালেন না? আমি কি এতই পর ছিলাম?”
এবার আব্বু স্বাভাবিক অবস্থা থেকে নড়েছড়ে দাঁড়ালো। বুঝতে আর দেরি নাই যে আব্বুর রাগ হচ্ছে সেটা। তবুও আব্বু আমাকে ধমক দিয়ে বলে তোর মোবাইল কোথায়? সকাল থেকে বাড়ি থেকে কয়টা কল দিয়েছে তার কি কোন খবর আছে? তোর আম্মুর শরীর হুট করে খারাপ হয়ে গেছে। বাড়িতে কেউ ছিলো না। আমিও কাজের মধ্যে ছিলাম। তোর এতো কি ব্যস্ততা যে কল রিসিভ করতে সমস্যা হচ্ছে? এতো প্রশ্ন এই কান দিয়ে ঢুকে ঐকান দিয়ে বের হয়ে গেছে। তবে মোবাইলের কথা স্পষ্ট শুনেছি। পকেটে হাত দিয়ে দেখি মোবাইল নাই। মোবাইল কোথায় সেটা ভাবতে ভাবতে মনে পড়লো সকালে আসার সময় মোবাইল বিছানায় রেখে আসছি। আব্বুকে বিষয়টা না বুঝিয়ে আম্মুর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করি। কারণ মোবাইল বাসায় রেখে আসছি বললে আরেক কাহিনী হবে।
এবার আব্বুকে পাশ কাটিয়ে হাসপাতালের কেবিনে ডুকে দরজাটা ভেতর থেকে লক দিয়ে আম্মুর হাত ধরে সবকিছু বুঝিয়ে বললাম। তখন আম্মু শুধু একটি কথা বলছিলো ‘‘আজ যদি আমার কিছু হয়ে যেতো তাহলে এই কথাগুলো কাকে বুঝিয়ে বলতি?” কথাটি আমাকে একদম বাকপ্রতিরুদ্ধ করে দেয়। প্রশ্নের জবাব ছিলো না আমার কাছে। কিছুক্ষণ আম্মুর পাশে মাথানিচু করে বসে আছি এমন সময় কে যেনো দরজায় টুকা দিলো। নিজেকে স্বাভাবিক করে দরজা খুলতেই দেখি আদি আর আন্টি।........
আপনাদের স্বরচিত লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দেন আমাদের ইমেইলে। E-mail: infotechteach21@gmail.com