৮ম পর্বের পর...
বুঝতে আর বাকি নাই যে আমাকে বকা দিবে সেটার। এমন বিপদের সময় আদি বলে উঠলো
-আরে এতক্ষণ সবকিছু নিতে পারলে আর দরজায় আসতেই আমাকে কেনো দিলে? এই নাও এবার রেখে আসো।
-আমি!
-হ্যাঁ, তুমি।
তাই করলাম। আমি তো রীতিমতো বোকা হয়ে গেছি। সামনে-পিছনে যখন বকা খাওয়ার সময় ঠিক তখনই আমাকে বাঁচিয়ে নিলো। তখন দেখলাম বাবার চেহারা কিছুটা আলোকিত হলো। তার মানে রাগ কমেছে। আম্মুকে খেতে বলে আমি বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। যদিও-বা আব্বুও সকাল থেকে কিছু খেয়েছে কিনা জানি না। তবে এটা নিশ্চিত যে আব্বুও খেয়ে নিবে।
বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। প্রচুর ক্ষুধা লেগেছে। কিন্তু বোঝায় কাকে! এদিকে আদি সকালে খেয়ে বের হতে বলেছিলো। অথচ তাকে মুখের উপর জবাব দিয়ে দিলাম খাবো না । একপর্যায়ে নাস্তা করতে বের হতে যখন একটু ঘাঁড ফিরালাম তখন আব্বু আমাকে খেতে ডাকে। আমিও মনের আনন্দে খেতে চলে যায়। খাওয়া শেষে অনক্ষেণ দেখার পর বুঝলাম আমার প্রতি সবার যে রাগ অভিমান ছিলো সব নিমিষে শেষ। ভাবতেই অবাক লাগার মতো অবস্থা। যায় হোক সবাই খুশি তো আমি আবার কষ্ট পাওয়ার কি আছে।
এভাবেই প্রায় ২দিন যাবৎ হাসপাতাল আর বাড়ি আসা-যাওয়া ছাড়া সব কাজ বন্ধ। আম্মুও প্রায় সুস্থ। সকালে ডাক্তার চেকআপে এসে যখন বলে সবকিছু ঠিকঠাক এবং চাইলে বাড়ি চলে আসতে পারবে তখন আমি কালবিলম্ব না করে হাসপাতালের একাউন্টেন্ট এর কাজটা সেরে আম্মুকে নিয়ে বাসায় চলে আসি।
পরদিন সকালে কলেজে যাওয়ার জন্য চিন্তা-ভাবনা করলাম। বেশ কয়েকদিন তো গেলাম না। আজ থেকে না হয় কলেজে নিয়মিত যায়। তাতেই ভালো হবে। যেই ভাবনা সেই বের হয়ে গেলাম। এবার অবশ্যই হাতে মোবাইল, পকেটে পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে বের হয়েছি। কারণ সেদিনের সামান্য ভুলে এতো বড় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল।
কলেজ আঙিনা আমার সবচেয়ে প্রিয় একটি জায়গা। বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা কিংবা পড়ালেখা সবকিছু মিলে এর চেয়ে ভালো কোনো জায়গা আমার চোখে আসে নাই। যায় হোক, কলেজে আসতেই কেমন জানি কলেজটা নতুন না লাগলেও মানুষগুলো সব নতুন মনে হচ্ছে। তাই সরাসরি ডিপার্টমেন্টে গেলাম। ক্লাসে দেখি মুন্নী ম্যাম। সেদিনের মতো ক্লাসে ঢুকতেই ম্যাম শুধু পড়ালেখা ছাড়া তেমন কিছু বললো না। অবশ্যই আমি আসার আগে কিছু বলছে কি-না তা সে বিষয়ে আমি অজ্ঞাত। তবে ক্লাস থেকে বের সময় ঠিকই বলে গেলো, ‘‘সকল কাজের মাঝখান থেকে পড়ালেখা যেনো বাদ না যায়”।
ক্লাস শেষ করে বের হতেই দেখা আকতার স্যারের সাথে। স্যার অবশ্যই খুবই মিশুক স্বভাবের। যে কারো সাথে খুবই সুন্দর করে কথা বলবে। আমরা অবশ্যই স্যারের সাথে খুবই ঘনিষ্ঠ তাই পড়ালেখার পাশাপাশি আরো কিছু আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়েও কথা হয়। কথা শেষে সোজা বঙ্গবন্ধু চত্বরে। চত্বরে গিয়ে অন্যদের অবস্থা কেমন তা জানি না।কিন্তু একটা বিষয় দেখে আমি তো অবাক। হঠাৎ চোখের সামনে এটা কি দেখলাম?
আপনাদের স্বরচিত লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দেন আমাদের ই-মেইলে। E-mail: infotechteach21@gmail.com