তৃতীয় পর্বের পর...
মানুষের সারাদিনের ব্যস্ততার বাইরেও একটা স্বস্থির জায়গা প্রয়োজন। আর বর্তমান সময়ে এসে সেটা আমরা ভালোবাসাকে বুঝি। আমাদের সম্পর্কটাও ঠিক যেন তাই। কাজের প্রয়োজনে দু’জন দুই প্রান্তে। কিন্তু কাজ শেষে দু’জনের ৩০-৪০ মিনিট কথা বলাটা মনে হয় সারাদিন একসাথে ছিলাম। একটা সময় ছিলো যখন আমরা এই সৈকতে এসে বিকেলের ডুবন্ত সূর্যের সাথে দু’জনে আড্ডা দিতাম। দুষ্টুমি কিংবা রাগ অভিমানের একটা বড় অংশ এখানেই। গত দুই-তিন বছরের কথা যদি স্বরণ করি তাহলে সম্ভবত সম্পূর্ণ গল্পটার একটা অংশ বিচে আর বাকি অংশ কলেজে। অথচ এখন একই জায়গায় দু’জনে বসে আছি। কিন্তু যে যার মতো মোবাইলে অনলাইন ট্রেনিংয়ে। নেই কোন কথাবার্তা। মোবাইলের কাজ শেষে যখনই আমরা চলে আসবো তখন পিছন থেকে কেউ একজনের ডাক শুনে পিছনে ফিরে দেখি সাহেদ। সাহেদ আমাদের পূর্ব পরিচিত হওয়ায় আদিকে নতুন করে পরিচয় করাতে হলো না। সাহেদ আসার সুবাদে আমরা আরো কিছুক্ষণ সেখানে বসে কথাবার্তা বলে একটু হেঁটে রেস্টুরেন্টে বসে হালকা নাস্তা করি। অবশ্যই বিল আদি দিয়েছিল। প্রথমতো সেদিন আদির প্রজেক্ট সম্মানি হাতে পেয়েছিল। দ্বিতীয়তো সে থাকতে কোনদিন আমাক বিল দিতে দেয় না। এরপর সাহেদ চলে গেলে আমরাও বাসার দিকে রওনা দিই। চিরায়ত প্রথা অনুযায়ী বয়ফ্রেন্ড সবসময় গার্লফ্রেন্ডকে বাসায় দিয়ে যায়। এবার তার উল্টোটা হলো। কারণ আমার বাসা তার বাসার আগে।
রাত প্রায় ১১টা বা কমববেশি হতে পারে; হঠাৎ আদির কল। কল রিসিভ করার সাথে সাথে ওপাশ
-কালকে একদিন কলেজে যায়?
-হঠাৎ এতো রাতে কল দিয়ে কলেজে যাওয়ার কথা কেনো? কোন কাজ আছে নাকি?
-আরে না। সারাদিনের কাজের ব্যস্ততার অবসান করার জন্য বিচে বসে কেমন জানি কলেজের কথাগুলো মনে পড়ে গেলো। তাই ভাবলাম কলেজে গিয়ে একটু বসি। যদি তোমার কোন ব্যস্ততা না থাকে তাহলে যাবো আর কি!
-আচ্ছা ঠিক আছে। কালকে না হয় কাজ নাই এটাই ধরে নিলাম।
-আচ্ছা তাহলে কালকে কলেজে দেখা হচ্ছে। ভালো থেকো। ( কল কেটে দিলো)
ভালো থেকো কথার প্রতিউত্তর দেওয়ার আগেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন। কেমন জানি লাগলো। যায় হোক, কালকে কলেজে দেখা হচ্ছে এটাই ফাইনাল।
সকাল ৯টা থেকে আমাদের ক্লাস। সম্ভবত ২টা ক্লাস করছিলাম। তারপর শহিদ মিনারের পাশে গিয়ে দেখি কিছু পুরাতন বন্ধুবান্ধবের সাথে আদিও বসে আছে। করোনার পর সবাইকে এভাবে একসাথে কলেজ ক্যাম্পাসে দেখবো ভাবতেও পারিনি। কারণ আমরা দু’একজন ছাড়া বাকি সবাই এখন অন্য কলেজে। কিছুক্ষণ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বুঝতে পারলাম সবাই আসতেছে বলেই দেখা করতে চাইলো। আমি তো ভাবলাম স্পেশাল কিছু হবে। মনে মনে হালকা ছ্যাঁকা খাইলাম।
আপনাদের স্বরচিত লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দেন আমাদের ইমেইলে। E-mail: infotechteach21@gmail.com
Tags:
লেখালেখি