কৃতজ্ঞতার প্রতিদানে খবর দেওয়ার শপথ

  


সেদিন শনিবার ছিলো। সকালে কোচিং করতে গেলাম। তার কয়েকদিন আগে মডেল টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছিলাম। সেটার রেজাল্ট দেখে আমি এতটাই ভেঙ্গে পড়ি যে পাশে এসে কেউ ভরসা দেওয়ার ছিলো না। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি। নিয়মিত পড়ালেখা তো দুরের কথা নিজেকে সংযত রাখা আমার পক্ষে খুব কঠিন হয়ে গেছিলো। এভাবে সময় চলতে থাকে। বন্ধুবান্ধবরা অনেকটা এগিয়ে গেছে আর আমি পিছিয়ে। আমার এরকম অবস্থা দেখে কয়েকজন মানুষ উৎসাহ দেওয়া শুরু করলো। তবুও কোন কাজ হলো না। তারপর একদিন কক্স ফুডে গিয়ে চিকেন খাচ্ছিলাম। সেদিন অবশ্যই ১৭ নভেম্বর রোজ মঙ্গলবার ছিলো। যে-ই মুহুর্তে খাওয়া শুরু করবো তখনই আমার টেবিলে একটা মেয়ে এসে বসলো। ভাবলাম কোথাও জায়গা না পেয়ে বসছে। একটু পর মেয়েটা আমাকে বললো, " নবী, রাস্তায় হাঁটতে গেলে অনেক সময় পায়ে কংক্রিট কিংবা ডাস্টবিনের ময়লা লাগবে। তাই বলে রাস্তায় হাঁটা বন্ধ করে দেওয়া কি উচিত?" কথাটা শুনে মুখে আর খাবার গেলো না। এমনিতে ডিপ্রেশন সেখানে জ্ঞান দিতে আসলো। একটু নড়েচড়ে বসার পর বললাম, "আপনি কি আমাকে কিছু বলতে চাইছেন নাকি আমি ভুল শুনছি.?" সে জবাবে বললো সবকিছু নাকি আমাকে বললো। তারপর ঠান্ডা মাথায় তার বাকি কথাগুলোও শুনলাম। শুনে মনে হলো মেয়েটি কথাগুলো খারাপ বলে নাই।

অবশেষে তার অনুপ্রেরণা আমাকে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে সহযোগিতা করলো। একদিন বললো, " কোন পরীক্ষায় কেমন হবেন তা জানি না। তবে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেন না কেন প্রথম যেখানে দিবেন সেখানে চান্স পাবেন। আর সেই খবরটা পরীক্ষার পর যদি সত্যি হয় তাহলে আমাকে জানাবেন"। তারপর থেকে সে আমাকে অনেক গাইড করতো। এক পর্যায়ে গিয়ে আমি নিজেকে শক্ত করে নিয়েছিলাম। 

মেয়েটা আমার সহপাঠী ছিলো। একসাথে কোচিং করতো। কিন্তু পরিচয় হওয়ার আগে তাকে সম্ভবত আমি কখনও দেখিনি। তাকে কথা দিয়েছিলাম, "প্রথম পরীক্ষার ফলাফল তাকে দিব"। তারপর তার নাম্বারটা দিয়ে বলছিলো রেজাল্ট দিলে যেন কল করে জানাই। তারপর থেকে তার সাথে আর যোগাযোগ করা হয়নি। 

Abdul Nabi,

Student of Cox’s Bazar City College 

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post