পর্বঃ- ০৬ এরপর থেকে...
কিছুটা অবাক হলাম। তবে এটা বুঝতে আর বাকি থাকলো না যে আমি একজন ছাড়া বাকি সবাই হয়তো আম্মুর অসুস্থতার বিষয়টা জেনে গেছে।
আদি আর আন্টি সোজা আম্মুর পাশে গিয়ে বসে। আমি দুর থেকে শুধু দেখতেছি তাদের চোখে মুখে মলিন চাপ পড়েছে। এটা দেখে কেমন জানি মনে হচ্ছে সবাই আমার কাছ থেকে কিছু একটা লুকাচ্ছে। এমন সময় আব্বুও কেবিনে আসলে অশ্রুসিক্ত হয়ে আমি বের হয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। কেমন জানি এক মূহুর্তের জন্য নিজেকে খুবই একা অনুভব হয়। এমন সময় পিছন থেকে কাঁধে হাত। স্বাভাবিক হয়ে দেখি আদি। কিছু না বলেই সে আমাকে তার সাথে সরাসরি বাসায় নিয়ে আসে। কোন কথা বলারই সুযোগ দিলো না।
সোপার একপাশে মাথা হেলান দিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে আছি। চিন্তায় প্রায় হালকা চোখে ঘুম চলে আসে। ঠিক ঐ সময়ে খেতে ডাকে। খাবো না বলে ঘুমাতে চলে গেলাম। কিছুক্ষণ পর আদি হাতে ভাতের প্লেট নিয়ে এসে ভাত খেয়ে নিতে বলে। বলা বাহুল্য যে আমি আম্মুর এমন অবস্থা এবং আমার সাথে সবার বৈরী আচরণের পর থেকে এক গ্লাস পানিও খাওয়া হলো না। তাই আনমনে ভাত খেয়ে সামনে তাকাতেই দেখি ফেলফেল করে তাকিয়ে আছে আদি। কিছুটা লজ্জা পেলেও ক্ষুধা তো আর লজ্জা মানে না।
এবার বিছানার একপাশে বসে সে আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করতেছে কি হয়েছে সেটা। আমিও নিতান্তই বোঝার চেষ্টা করি। আম্মুর রক্তের উচ্চ চাপ ছিলো। হুট করে প্রেসার বেড়ে গেলে মা অস্বাভাবিক হয়ে যায়। আজকেও তাই হলো। বাড়িতে কেউ ছিলো না। ভাবতে গেলে আমিই একমাত্র কাছাকাছি ছিলাম। কিন্তু মোবাইল করেও তারা আমাকে পেলো না। কারণ আমি মোবাইলটা ভুলে বাসায় রেখে গেছিলামা। অবশেষে ক্লান্ত শরীরে ঘুম।
সম্ভবত রাত ১২টা হবে। হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলে পাশেই দেখি আদি তখনও ঘুমায় নি। আমি জেগে উঠেছি সেটা বুঝতে পেরে হালকা করে একটা চা নিয়ে আসে। এতক্ষণ একা একা বসে না থেকে ঘুমালো না কেনো জিজ্ঞেস করতেই মুখের উপর উত্তর। ‘‘একদিকে আন্টি হাসপাতালে আর এদিকে তুমি সারাদিন কিছু না খেয়ে যে পরিমাণ দুর্বল হয়েছিলে তাতে কি আর আমি ঘুমাতে পারি?” আমার কিছু বলার ছিলো না।.....
আপনাদের স্বরচিত লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দেন আমাদের ইমেইলে। E-mail: infotechteach21@gmail.com
এই গল্পের পূর্ববর্তী পর্ব সমূহঃ