চতুর্থ পর্বের পর...
এদিক সেদিক চিন্তা না করে তাদের মাঝে গিয়ে বসলাম। যেই মাত্র বসলাম সেই তারা আমাকে দাঁড় করিয়ে বলে ,‘‘কি যা তা ড্রেস আপ নিলি এটা? অন্তত আজকে হলেও একটা ফরমাল ড্রেস আপ হওয়া উচিত ছিলো”। আমি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে তাদের দিকে তাকাতেই দেখি সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসিও রীতিমতো শুরু করে দেয়। একটু মন খারাপ হলেও তাদের সাথে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করি। কিছুক্ষণ কলেজ ক্যাম্পাসে পুরাতন গল্পে ফিরে গেলাম। এই সময়টাতে আদির সাথে একটি বারের জন্যও চোখাচোখি হয়নি।
হঠাৎ সায়েম বলে, ‘‘চল বাইরে যায়। এখানে আর থাকতে ভালো লাগতেছে না”। সবাই তাই করলো। আমি যেতে না চাইতেও তারা আমাকে নিয়ে যায়। গাড়ি থেকে নেমে দেখি আরও বেশ কয়েকজন বন্ধু দাঁড়িয়ে আছে। এবার সবাই রেস্টুরেন্টে বসতে সাইদুল উচ্চ স্বরে বলে, ‘‘অভিনন্দন বন্ধু। তোর এই সাকসেস আমরা কখনো আশা করিনি। কেনো না তুই যে হারামি তাতে তোরে দিয়ে কিছু হওয়ার কথা না। তার মধ্যে তুই প্রায় কয়েকটা বছর পার করলি”। এতক্ষণপর সকল দুশ্চিন্তা দুর হলো। এদিকে আদির দিকে তাকাতেই দেখি সে প্রায় কান্না করবে এমন অবস্থায়। আমি তো অপরাধী। এবার নিজের উপর নিজেরই খারাপ লাগা শুরু হয়। কারণ এরকম একটা সেন্সেটিভ বিষয় খেয়াল ছিলো না। আমি লজ্জায় মাথানিচু করে নিলাম। অবশ্যই তখন আমার মন খারাপ হয়ে গেছে তা সবাই বুঝতে পেরে সকলে সারপ্রাইজ হিসেবে কিছু জিনিস দেয় যা আসলেই অপ্রত্যাশিত। সারপ্রাইজ তো সারপ্রাইজ হিসেবেই রয়ে গেলো এবং তা ঐ অবস্থায় বাসায় নিয়ে যায়।
বাড়ির ফেরার পথে আচমকা তাদের সারপ্রাইজের বিষয়টা মনে পড়ে গেলো। সকলের দেওয়া চমকের কথা ভেবে মনে মনে হাসতে হাসতে রিকশা করে বাড়ি ফেরার পথেই আব্বুকে দেখলাম একটা টমটমে। অবশ্যই আব্বুর সাথে আম্মুকেও দেখি অস্বাভাবিক অবস্থায়। আম্মু অসুস্থ আর আব্বু আম্মুকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছে। হঠাৎ আম্মুর কি হলো বুঝতে না পেরে তাদের পিছুপিছু আমিও একই রিকশা নিয়ে হাসপাতালে চলে আসি। আমাকে দেখার পরও আব্বু তাড়াহুড়ো করে নিজেই আম্মুকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। আমার কোন কথারই জবাব দিলো না। আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম কেনো আমার সাথে কথা বলতেছে না! পরে আব্বুর মুখ থেকে উচ্চারিত হলো, ‘‘এখানে থাকার প্রয়োজন নাই। চলে যাও”। আমি কিছু বলার আগেই পুনরায় একই কথা বললে কান্না করতে করতে হাসপাতালের সামনেই দাঁড়িয়ে থাকলাম।
আপনাদের স্বরচিত লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দেন আমাদের ইমেইলে। E-mail: infotechteach21@gmail.com