দ্বিতীয় পর্বের পর...
১ জানুয়ারী সকাল ৮টার দিকে কলেজে এসেই প্রথম দেখা আদির সাথে। দু'জনেই চমকে গেলাম। অনেকদিন পর হঠাৎ দেখা হলে যা হয় আর কি। একসাথে বসে অনেক কথা হলো। কলেজ ক্যান্টিন তখন বন্ধ থাকায় বাইরে গিয়ে নাস্তা করে যে যার মতো চলে গেলাম। ওহ হ্যাঁ, বলা হয়নি। আদি হচ্ছে চট্টগ্রাম থাকাকালীন আমার সমসাময়িক সোস্যাল ওয়ার্কার। দু'জনেই পরিবেশ আন্দোলনে কাজ করতাম। তার এডমিশন চট্টগ্রাম। কিন্তু আমাদের কলেজে তার বোনের সাথে কি একটা কাজে যেনো আসলো।
শীতল হাওয়ায় ক্যাম্পাস প্রায় উপভোগ্য। সকালে টিউশনি শেষে যাবতীয় কাজ সেরে সোজা কলেজে। কলেজের প্রতিটি জায়গা, ভবন চেনা-পরিচিত। কারণ আমি এই কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করছি। প্রথম কয়েকটা ক্লাস স্বাভাবিকভাবে হওয়ার পর ক্যাম্পাসে আড্ডা না দিয়ে চলা যাওয়ার আগ মুহূর্তে চোখে পড়লো সেই স্মৃতিময় বটগাছ। ইন্টারমিডিয়েটে থাকতে বটগাছ বললেই আমরা বোঝে যেতাম কোথায় সেটা। সেখানে গিয়ে মনে পড়ে গেলো সেই পুরাতন স্মৃতি। তখন বড় ভাই-বোনদের সাথে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য্য ও পড়ালেখার পরিবেশ হিসেবে খুবই ভালো লাগতো। কোনো কারণে ক্লাস না হলে বন্ধুদের সাতে আড্ডা না দিয়ে সোজা বটগাছ তলা এসে হাজির। এসেই বড়দের সাথে আড্ডায় মিশে যাওয়া। ছোটবেলায় বড়রা বলতো সিনিয়ররা খুবই প্যারাদায়ক। আমি কিন্তু সেটা উপলব্ধি করতে পারিনি। কারণ সেখানে রুহুল আমিন ভাই ছিলো। রুহুল আমিন ভাই ছিলো তৎকালীন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী। কলেজে শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থী সকলের কাছে এক নামে পরিচিত।
ফেব্রুয়ারীর প্রায় মাঝামাঝি সময়ে আন্তঃডিপার্টমেন্টীয় সাংগঠনিক কাজে আমাদের সেশনের প্রায় সকলে উপস্থিত হয়েছিল। ক্লাসভর্তি ছেলেমেয়ে দেখে সালাউদ্দীন স্যার প্রায় ২ ঘণ্টা ক্লাস করে নিলো। করোনার পর সম্ভবত এটাই দীর্ঘক্ষণ ক্লাস নেওয়া। স্যার খুশি হলেও সেদিন অবশ্যই সবারই খারাপ লাগছে। যায় হোক, কাজ শেষে সেদিনের মতো কলেজ থেকে চলে যাওয়ার পথে পুনরায় আদির সাথে দেখা হলে দু’জনে স্বাভাবিকভাবে কথা বলে সেদিনের মতো ব্যস্ততার শুরু। অর্থাৎ সাংগঠনিক কাজে মনোযোগ দিলাম। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সমস্যা ও তার প্রতিকার নিয়ে দলগত কাজের মাঝখানে চট্রগ্রাম টিম আমাদের সাথে সংযুক্ত হয়। আর সেদিন টিম লিড দিচ্ছিল আদি। প্রায় ৩০ মিনিট পর আমাদের কাজ শেষ হয় এবং আমরা অর্থাৎ আমি আর আদি বিচের দিকে চলে যায়। বিচ বলতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
কোন চেয়ারে না বসে দু’জনে বসে গেলাম সৈকতের শুকনো বালিতে। অবশ্যই এই বালিতে আমাদের অনেক গল্প রয়েছে। সেই গল্প হঠাৎ করে ভেসে আসলো চোখের কোটরে। আরেকটা কথা; সাংগঠনিক পরিচয় ছাড়া আদির সাথে ভিন্ন একটি সম্পর্ক রয়েছে।
আপনাদের স্বরচিত লেখা প্রকাশ করতে চাইলে আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দেন আমাদের ইমেইলে। E-mail: infotechteach21@gmail.com